ফোনে আগুন লাগার কারণ: সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা আপনারা সকলে কেমন আছেন আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আপনাদের সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে আমরা সুরু করবো আমাদের আজকের টিপস ফোনে আগুন লাগার সম্ভাব্য কিছু কারন সম্পর্কে। মুলত মোবাইল ফোন বিস্ফোরিত হয় কেন? আর কীভাবেই বা আপনারা আপনাদের ফোনকে বিস্ফোরণের হাত থেকে রক্ষা করবেন? এই প্রশ্নের সমাধান বের করব আমাদের আজকের এই পোস্টে। আজকাল ইন্টারনেট খুললেই মোবাইল বা স্মার্টফোনের ব্যাটারিতে আগুন ধরে যাওয়া কিংবা ফোন বিস্ফোরণের মত ঘটনাগুলো অনেক সময় চোখে পড়ে। অনেক ক্ষেত্রেই আবার এসব ঘটনায় ব্যবহারকারীরা আহত হওয়ার মত দুঃখজনক ঘটনাও দেখা যায়। ফোন বিস্ফোরিত হয়ে তাতে আহত ব্যক্তি মারা যাওয়ার ঘটনাও ঘটতে দেখা গিয়েছিল অতীতে।
বিশ্বের নামীদামী ফোন নির্মাতা যেমন অ্যাপল ও স্যামসাং এর তৈরি ফোনগুলোও বিস্ফোরিত হওয়ার রেকর্ড আছে। স্যামসাং তো ২০১৬ সালে তাদের ফ্ল্যাগশিপ ফোন গ্যালাক্সি নোট ৭ বিস্ফোরণের ঘটনায় পুরো মডেলটিই মার্কেট থেকে তুলে নিতে বাধ্য হয়েছিলো। তাই এটা নিয়ে সিরিয়াসলি ভাবা আমাদের একান্ত দরকার রয়েছে।
আরও পড়ুন: ফেসবুক হেল্পলাইনে যোগাযোগের উপায় জানুন
স্মার্টফোন কেন বিস্ফোরিত হয়?
ফোনে আগুন লাগার কারণ, বন্ধুরা স্মার্টফোনের সব অংশ কিন্তু বিস্ফোরণের জন্য দায়ী নয়। মূলত এর ব্যাটারিটিই বিস্ফোরিত হওয়ার ঘটনা বেশি চোখে পড়ে। বাকী সব যন্ত্রাংশ আসলে বিস্ফোরিত হওয়ার মত তেমন কিছু দিয়ে তৈরি করা হয় না। ফোনে ব্যবহৃত লিথিয়াম আয়ন বা লিথিয়াম পলিমার ব্যাটারি যথেষ্ট উন্নত প্রযুক্তিতে তৈরি করা হয়, এবং এই ব্যাটারিগুলো স্ট্রেস নেয়ার উপযোগী করেই বানানো হয়েছে। কিন্তু তা স্বত্বেও অনেক সময় দুটি কারণে এসব ব্যাটারিও কখনো কখনো বিস্ফোরিত হতে পারে।
প্রথম কারণটি হলো পাঙ্কচার বা লিকেজ। অসাবধানতাবশত ফোন হাত থেকে পড়ে গেলে, অত্যাধিক চাপে পিষ্ট হলে, কিংবা আঘাত লেগে আপনাদের ব্যাটারির সেলগুলো পাঙ্কচার হয়ে এদের মাঝে শর্ট সার্কিট হতে পারে। এর ফলে ফোনের ব্যাটারিতে আগুন ধরতে পারে। এছাড়াও সস্তা, আজে বাজে ব্র্যান্ডের ব্যটারিগুলোতে মাইক্রস্কোপিক অনেক ভেজাল মিশ্রিত থাকতে পারে। এগুলোও অনেক ক্ষেত্রেই সেলগুলোর সংস্পর্শে এসে শর্ট সার্কিট ঘটাতে পারে।
ফোনে আগুন লাগার কারণ
তবে বন্ধুরা দুর্ভাগ্যজনকভাবে স্যামসাং গ্যালাক্সি নোট সেভেন এর ক্ষেত্রে যেটা ঘটেছিল তা হলো চার্জ হওয়ার সময় ফোন বিস্ফোরিত হওয়া। চার্জ হওয়ার সময় ব্যাটারিতে স্বাভাবিকভাবেই তাপ উৎপন্ন হয়। এই তাপও হতে পারে ব্যাটারি বিস্ফোরিত হওয়ার মুল কারণ, যদি তাপের পরিমাণ অতিরিক্ত হয়। কেননা প্রচণ্ড উত্তাপ ব্যাটারিতে শর্ট সার্কিট তৈরি করতে পারে।
যদিও আমরা সকলেই জানি অনেক স্মার্টফোন প্রস্তুতকারক কোম্পানিই তাদের ডিভাইসের ব্যাটারিতে ওভারহিটিং প্রটেক্ট করার সিস্টেম দিয়ে থাকেন। কিন্তু তার পরেও স্যামসাং এর মত একটি ভালো ব্র্যান্ডের গ্যালাক্সি নোট সেভেনও কিন্তু বিস্ফোরিত হয়েছিল। তারা দাবি করে যে তারা বিভিন্ন ম্যানুফ্যাকচারার এর কাছ থেকে ব্যাটারি কিনে থাকে। হয়তো তাদেরই কোনো একটা ব্যাচ এর ব্যাটারিতে ত্রুটি ছিল। এটাও হতে পারে।
কীভাবে বিস্ফোরণের থেকে নিরাপদ থাকা যায়
বন্ধুরা বিপদ কখন আসে এটা বলা মুশকিল। কিন্তু তার পরেও আমরা সতর্কতামূলক কিছু ব্যবস্থা নিতেই পারি তাই না? চলুন কিছু সতর্কতা সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
আপনাদের স্মার্টফোন চার্জ দেওয়ার সময় বেশি গরম হয়ে গেলে সাথে সাথেই চার্জে লাগানো থেকে বিরত থাকুন। আর যদি চার্জ হতে হতেই গরম হয়ে যায় তাহলে ফোনটি চার্জার থেকে খুলে ফেলুন এবং ঠাণ্ডা হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন ঠান্ডা হয়ে গেলে আবার চার্জে লাগান। এই সমস্যা চলতে থাকলে সার্ভিস সেন্টারে যোগাযোগ করুন।
অবশ্যই ফোনের সাথে দেয়া অরিজিনাল চার্জারটি ব্যবহার করবেন। আর যদি আসল চার্জারটি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে একটু কষ্ট করে এবং বেশি টাকা দিয়ে হলেও আপনাদের ফোন প্রস্তুতকারকের তৈরি বা এপ্রুভড কোনো চার্জার কিনুন। অনেকেই ফোন চার্জে থাকা অবস্থায় বিছানায় শুয়ে ফোনে নেট ব্রাউজ করেন কিংবা মুভি দেখে থাকেন। তবে এটা খেয়াল রাখবেন ফোন চার্জে থাকা অবস্থায় নিজের শরীরের নিচে কিংবা বালিশের নিচে যাতে ফোনের অবস্থান না হয়। কারণ এসব ক্ষেত্রে ফোন বেশি গরম হয়ে যেতে পারে, এবং তা থেকে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
আপনাদের ফোনটি কোথায় চার্জ দিচ্ছেন সেটি অবশ্যই খেয়াল আপনাদের কে খেয়াল রাখতে হবে। ফোন উত্তপ্ত কোনো স্থানে কিংবা সরাসরি রোদ/সূর্যালোকের নিচে রেখে কখনোই চার্জ দিবেননা।
যেকোনো অবস্থায় ফোন অস্বাভাবিক রকম গরম হলে ব্যাপারটি এড়িয়ে না গিয়ে বরং ভালোভাবে লক্ষ্য করুন যে উত্তাপ বাড়ছে কিনা। যদি উত্তাপ শুধু শুধুই বাড়তে থাকে তাহলে ফোনটি দূরে নিরাপদ স্থানে রেখে দূর থেকেই পর্যবেক্ষণ করতে হবে যে ফোনটি বিস্ফোরিত হতে যাচ্ছে কিনা। সম্ভব হলে ফোনটি বন্ধ করে রাখুন।
আশা করি আমাদের আজকের এই পোস্টটি আপনাদের কাজে লাগবে। এই পোস্টটি আপনাদের কেমন লেগেছে? কমেন্টে আপনাদের আইডিয়াগুলোও শেয়ার করবেন এবং অবশ্যই শেয়ার করবেন!
Related