মেকআপের পর মুখ কালো হয়ে যায়, এর থেকে বাঁচার কৌশল

মেকআপের জিনিসের নাম, এর থেকে বাঁচার কৌশল

মেকআপের জিনিসের নাম: সুপ্রিয় বন্ধুরা আমরা প্রায়ই দেখতে পাই মেকআপের পরে মুখটা কালো হয়ে গেছে, যেখানে মেকআপ এর পর মুখ আকর্ষণীয় দেখানোর কথা। বন্ধুরা মেকআপের পর মুখ কালো হয়ে যায় এই সমস্যার মূল কারণ হচ্ছে ফাউন্ডেশনের অক্সিডাইজেশন। মেকআপের জিনিসের নাম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

বন্ধুরা স্কিন টাইপ এবং শেডের সাথে মিল রেখে ফাউন্ডেশন ব্যবহার করলেও কিছু সময় পরে তা কালো হয়ে যায়। এর কারণ ফাউন্ডেশনের অয়েল ত্বকের ন্যাচারাল অয়েলের সাথে মিশে ত্বকের পিএইচ ব্যালেন্সের সাথে বিক্রিয়া করে। এর ফলে ফাউন্ডেশনের শেড বদলে মুখ কালো হয়ে যায়। আর্দ্র বাতাস, সূর্যের তাপ ইত্যাদি কারণেও ফাউন্ডেশন ত্বকের সাথে বিক্রিয়া করতে পারে।

বন্ধুরা একটা আপেল কেটে বাতাসে ফেলে রাখলে যেরকম অবস্থা হয়, ঠিক তেমনি ফাউন্ডেশনের দশাও একইরকম হয়। তাই আজকের এই আর্টিকেল থেকে জানতে পারবেন মেকআপের পরে মুখ কালো হয়ে যাওয়া থেকে বাঁচার কৌশল।

আরও পড়ুন: নতুন সস্তা স্মার্টফোন ইনফিনিক্স হট 12i এলো সবার প্রকাশে

মেকআপের জিনিসের নাম

পাঠক বন্ধুরা আমরা মেকআপের সময়ে সবার প্রথমে ফাউন্ডেশন ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু এতে ফাউন্ডেশনে থাকা রাসায়নিকের সাথে স্কিনের ন্যাচারাল অয়েলের বিক্রিয়া ঘটে বলে মেকআপের পরে আমাদের মুখ কালচে দেখায়। এ জন্য ফাউন্ডেশনের আগে মুখে প্রাইমার ব্যবহার করা অতি অত্যাবশ্যক। তাতে ত্বকের উপর একটি বেস তৈরি হবে, আর ফাউন্ডেশন আপনাদের মুখে স্থায়ীভাবে বসবে।

বন্ধুরা ত্বকে প্রাইমার অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। এটি অতিরিক্ত সিরাম ক্ষরণ করা নিয়ন্ত্রণ করে, ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে, উজ্জ্বলতা বাড়ায়, এবং স্কিন এর টোন সমানভাবে বজায় রাখে। তাছাড়াও প্রাইমার ত্বকে এমন একটি লেয়ার তৈরি করে তা স্কিনের অয়েল ফাউন্ডেশনের রাসায়নিকের সরাসরি সংস্পর্শে না আসে। তাই স্কিনে রিঅ্যাকশন হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়।

বন্ধুরা প্রাইমার কেনার বা ব্যবহারের আগে অবশ্যই স্কিন টাইপ বুঝে বাছাই করবেন। শুষ্ক ত্বকের জন্য হাইড্রেটিং প্রাইমার এবং তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ম্যাটিফায়িং প্রাইমার ব্যবহার করতে হয়। কম্বিনেশন ত্বকের জন্য হাইড্রেটিং ও ম্যাটিফায়িং দুই ধরণের প্রাইমারই লাগানো যায়। শুষ্ক দিকটায় ব্যবহার করবেন হাইড্রেটিং আর তৈলাক্ত অংশে ম্যাটিফায়িং প্রাইমার।মেকআপের জিনিসের সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

ফাউন্ডেশন ব্যবহার করতে হবে সঠিকভাবেঃ

বন্ধুরা ফাউন্ডেশন ছাড়া মেকআপে গ্ল্যামারাস লুকটা কোনো ভাবেই আসবে না। আবার স্কিন টোন অনুযায়ী ফাউন্ডেশন ব্যবহার না করলে অনেক সময় মেকআপটা ভালোও দেখাবে না। তাই সঠিক ফাউন্ডেশন বাছাই করতে হবে সুন্দর লুকের জন্য। ফর্সা ত্বকের অধিকারীরা ত্বকের শেডের চাইতে এক শেড কম এবং শ্যামলা বা কালো ত্বকের অধিকারীরা ত্বকের শেডের চাইতে এক/দুই শেড উজ্জ্বল ফাউন্ডেশন ব্যবহার করবেন।

বন্ধুরা সঠিক ফাউন্ডেশন বাছাই করছেন কিনা তা বুঝতে দোকানে থাকতেই টেস্ট করে নিতে হবে (যদি সম্ভব হয়)। সামান্য ফাউন্ডেশন লাগিয়ে কয়েক ঘন্টা অপেক্ষা করতে হবে। যদি ঠিকমতো ত্বকে বসে যায় তবেই কিনতে হবে। লাগানোর পরে যদি আপনাদের মনে হয় খুব তাড়াতাড়ি কালো হয়ে যাচ্ছে বা ভাসা ভাসা দেখাচ্ছে, তবে বুঝে নিবেন জিনিসটি ভালো নয়।

ফাউন্ডেশন অবশ্যই ক্রিম মাখানোর মতো করে ত্বকে অ্যাপ্লাই করবেন না। ফোঁটা ফোঁটা করে ফাউন্ডেশন লাগিয়ে আঙ্গুলের ডগা বা বিউটি ব্লেন্ডার দিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। নিচ থেকে উপরের দিকে ব্লেন্ড করলে বেশি ভালো হয়। তাড়াহুড়ো একদম করবেন না, তাতে মুখে ফাউন্ডেশনের ছোপ ছোপ ভাবটা থেকে যাবে। আর হ্যাঁ প্রয়োজনের চাইতে অতিরিক্ত ফাউন্ডেশন কখনোই ব্যবহার করবেন না।

কনসিলার বেশি গাঢ় করবেন নাঃ

বন্ধুরা কনসিলারের কাজ মূলত চোখের চারপাশের ও মুখের দাগগুলো নিখুঁতভাবে ঢেকে দেওয়া। কনসিলার লাগানোর কয়েক ঘন্টা যেতে না যেতেই যদি দাগ স্পষ্ট হয়ে যায় তাহলে কিন্তু কোন লাভ নেই। কখনোই বেশি গাঢ় করে কনসিলার লাগাবেন না না হলে ত্বকের উপরেই ফাটা ফাটা ভাব চলে আসবে। দাগ ঢাকতে যতটুকু দরকার ততটুকু কনসিলার লাগিয়ে ভালো করে ব্লেন্ড করে নিবেন।

শুষ্ক লিপস্টিক পরিহার করুনঃ

পাঠক বন্ধুরা অতিরিক্ত শুষ্ক বা ম্যাট লিপস্টিক ব্যবহারে ঠোঁট কয়েক ঘন্টার ভিতরেই শুষ্ক, নিষ্প্রাণ, ও ফাটা দেখা যায় । লিপবাম বা লিপগ্লস ব্যবহারেও এর কোনো সমাধান মিলবে না। তাই ঠোঁট ফাটার সমস্যা থাকলে ম্যাট লিপস্টিক এড়িয়ে যাওয়াই উত্তম। তবু যদি ম্যাট পড়তে চান, তাহলে লিকুইড ম্যাটের বদলে পেন্সিল ম্যাট লিপস্টিক ব্যবহার করতে পারেন। কারণ ম্যাট পেন্সিলে মোম আর তেলজাতীয় উপাদান বেশি থাকে বলে ঠোঁট খুব সহজে শুকিয়ে যায় না।

সবশেষে ব্যবহার করুন সেটিং পাউডার ও সেটিং স্প্রেঃ

বন্ধুরা মেকআপের সর্বশেষ ধাপ হচ্ছে সেটিং পাউডার ও সেটিং স্প্রে ব্যবহার করা। যার মাধ্যমে স্কিন তৈলাক্ত বা কম্বাইন্ড, মেকআপ করলে কালচে দেখায়, তাদের জন্য এই দুইটি জিনিস ব্যবহার করা অতি অত্যাবশ্যক। ভালোমানের সেটিং পাউডার দিয়ে মেকআপ সেট করার পরে সেটিং স্প্রে দিয়ে মেকআপ লক করে নিতে হবে।

মেকআপ করার পরে সঠিকভাবে যদি সেটিং পাউডার না লাগালে মুখ পাউডারি দেখাবে। সেটিং স্প্রে ব্যবহারে সেই ডাস্টি ভাবটা কেটে যায়। এছাড়াও সেটিং স্প্রে স্কিনে গ্লোয়িং ইফেক্ট আনবে ও ন্যাচারাল দেখায়। পাশাপাশি দিনভর মেকআপকে স্মাজ-ফ্রি রাখতেও সেটিং স্প্রে-র কোনো জুড়ি নেই।

বেসিক স্কিনকেয়ার রুটিন মেনে চলুনঃ

বন্ধুরা মেকআপ-পরবর্তী কালচে ভাব দূর করার জন্য সঠিকভাবে মেকআপ করা যেমন জরুরি, ঠিক ততোটাই জরুরি স্কিনকে গভীর থেকে পরিষ্কার করে রাখা। বন্ধুরা অপরিষ্কার ত্বকে যতো দক্ষতার সাথেই মেকআপ করা হোক না কেন, অল্প সময়ের মধ্যেই তা মুখকে বিশ্রী করে তুলে। বেসিক স্কিনকেয়ার রুটিন মেনে চললে মুখে মেকআপ ভালোমতো বসবে আর কালোও হয়ে যাবে না।

তবে নিয়ম মেনে প্রতি সপ্তাহে ক্লিনজিং, টোনিং, ও স্ক্রাবিং করুন। ত্বকের মৃত কোষ, রোদে পোড়া দাগ, মেছতার দাগ, ব্রণের সমস্যা কমে আসতে বাধ্য। ত্বকের ধরণ বুঝে সিরাম ও ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। বাইরে বের হবার সময়ে সানস্ক্রিন ও ছাতা ব্যবহার করতে হবে। পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ, পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান, পর্যাপ্ত বিশ্রাম এই বিষয়গুলো মেনে চলবেন। আর ত্বকের জন্য কোন প্রসাধনী ভালো হবে সেটাও খুঁজে বের করতে হবে।

স্কিনের পিএইচ ব্যালেন্স ঠিক রাখুনঃ

পাঠক বন্ধুরা মেকআপ কালো হয়ে যাওয়ার একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে স্কিনের পিএইচ ব্যালেন্স ঠিক না থাকা। তাই এই সমস্যা সমাধানের জন্য ভালোমানের টোনার ব্যবহার করা প্রয়োজন। বলিরেখা দূর করতে ও ত্বকের বাড়তি পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে বন্ধুরা টোনারের কোন বিকল্প নেই। টোনিংয়ের কারণে সিবাম ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণে থাকে, ময়লা, মেকআপ, এবং মৃত কোষ ঝরে গিয়ে ত্বক থাকে সজীব ও উজ্জ্বল। পাশাপাশি ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় এবং পিএইচ ব্যালেন্স ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *