সিম কার্ড ছাড়া আইফোন-সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা আপনারা সকলে হয়তো জানেন সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া আইফোন ১৪ সিরিজে নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে সিম এর পরিবর্তে ই-সিম ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থাৎ সেসব আইফোনে কোনো সিম কার্ড স্লট নেই। ফলে সেগুলোতে আমাদের দেশের সাধারণ সিম কার্ড ব্যবহার করা যাবেনা। এসব মডেলে শুধুমাত্র ই-সিম ব্যবহার করা যাবে।
বন্ধুরা এখন এই বিষয় নিয়ে অসংখ্য আইফোন ভক্তদের চিন্তার শেষ নেই। বিশেষ করে বাংলাদেশের মত দেশগুলোতে যেখানে কিনা ই-সিম এর প্রচলন এখনো ঢালাওভাবে শুরু হয়নি। সেক্ষেত্রে কিভাবে নতুন আইফোন ১৪ সিরিজের ফোনগুলো ব্যবহার করা যাবে সেই নিয়ে ভাবনার শেষ নেই। তাই আজকের এই পোস্টে আমরা আইফোন ১৪ এর সিম জটিলতার সকল সমাধান সম্পর্কে আলোচনা করবো।
আপনাদের প্রথমেই বলে রাখি, নতুন আইফোন ১৪ লাইন-আপের যুক্তরাষ্ট অর্থাৎ ইউএস ভ্যারিয়েন্টে ফিজিক্যাল সিম কার্ড স্লট থাকছেনা। ফিজিক্যাল সিম স্লট এর পরিবর্তে অ্যাপল এখানে ই-সিম ব্যবহারের সুবিধা প্রদান করেছে। আবার এই সুবিধা অনেক দেশের ব্যবহারীদের কাছে অসুবিধায় পরিণত হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া অন্যান্য দেশগুলোর আইফোন মডেলে ফিজিক্যাল সিম স্লট ও থাকছে।
আইফোন ও ই-সিম
বন্ধুরা আইফোনে ই-সিম সাপোর্ট রয়েছে বেশ অনেক বছর ধরেই। আইফোন ১০এস মডেল এর মাধ্যমে আইফোনে ই-সিম সাপোর্ট চলে আসে। এর পর থেকে প্রতিটি আইফোনের মডেলে ই-সিম সাপোর্ট আছে। তবে আইফোন ১৩ পর্যন্ত সকল আইফোনের মডেলে ই-সিম এর পাশাপাশি ফিজিক্যাল ন্যানো সিম স্লট রয়েছে। অর্থাৎ ই-সিম ব্যবহারের বিষয়টি তখন অত্যাবশ্যকীয় ছিলোনা।
তাই ই-সিম এর সুবিধা হলো এখানে কোনো প্লাস্টিকের সিম কার্ড স্লট নেই। অনেকটা সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্টে লগিন করার মত করেই ই-সিম প্রোফাইল একটিভ করা যায় বেশ সহজেই। এখন আইফোন ১৪ এর যুক্তরাষ্ট্র মডেলগুলোতে অ্যাপল সম্পূর্ণভাবে ফিজিক্যাল সিম বাদ দিয়েছে, রেখেছে শুধুমাত্র ই-সিম এর অপশন।
আইফোন ১৪ এর মডেলগুলোতে শুধুমাত্র ই-সিম থাকছে, থাকছেনা কোনো ফিজিক্যাল সিম স্লট – এই তথ্য আংশিক সত্য ও আংশিক সত্য নয়। এই তথ্যের সত্য হলো শুধুমাত্র আইফোন ১৪ সিরিজের ইউএস অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে। অন্যসব দেশের আইফোন ১৪ মডেলে ঠিকই ন্যানো সিম স্লট ও ই-সিম, উভয়ই বর্তমান থাকছে।
আইফোন ১৪ ও বাংলাদেশ
পাঠক বন্ধুরা এখন প্রশ্ন হলো আইফোন ১৪ এর ইউএস ভ্যারিয়েন্টে ফিজিক্যাল সিম ট্রে নেই, এই বিষয়ে কি বাংলাদেশী আইফোন ব্যবহারীদের চিন্তা করা উচিত? বন্ধুরা উত্তর হলো হ্যাঁ, বাংলাদেশের আইফোন ব্যবহারকারীদের জন্য এই তথ্য ভীষণ প্রয়োজনীয়। কেনো প্রয়োজনীয়, সেই বিষয়ে চলুন একটু জেনে নেই।
বন্ধুরা ইতিমধ্যে আমরা বলেছি যে বাংলাদেশে অফিসিয়ালি আইফোন বিক্রি বা তৈরী হয়না। যার ফলে যুক্তরাষ্ট, জাপান, চীন, ভারত, ইত্যাদি দেশের জন্য তৈরি করা আইফোন আমাদের দেশে আমদানি করে আনা হয়। এইসব ফোন কিন্তু অ্যাপল বিক্রির জন্য আনেনা, বরং একজন বিক্রেতা তার টাকা দিয়ে কিনে সেগুলো দেশে এনে বিক্রি করেন।বন্ধুরা এখন সমস্যা হলো অন্য দেশ থেকে কেনা আইফোন কিন্তু উক্ত দেশের ভ্যারিয়েন্ট, যার ফলে এর ফিচারগুলো উক্ত দেশের উপযোগীই হবে।
অর্থাৎ আমরা এখানে বুঝানোর চেষ্টা করছি যে যুক্তরাষ্ট থেকে কিনে আনা একটি আইফোন ১৪ এর মডেলে কিন্তু ফিজিক্যাল সিম ট্রে থাকছেনা। এখন যেসব সাপ্লাইয়ার অন্য দেশ থেকে আইফোন দেশে এনে বিক্রি করেন, তারা যদি আপনাদের কাছে ইউএস ভ্যারিয়েন্ট বিক্রি করে, সেক্ষেত্রে আপনারা সিম ব্যবহার করতে পারবেন না। এর বর্তমান একটি সমাধান হলো ইউএস ভ্যারিয়ান্ট ছাড়া অন্য দেশের জন্য তৈরী আইফোন ১৪ মডেলসমূহ কেনা।
বন্ধুরা বাংলাদেশে সবেমাত্র গ্রামীণফোন ই-সিম বিক্রি শুরু করেছে। দেশে এই নতুন প্রযুক্তি ছড়িয়ে যেতে অনেকটা সময় লাগবে। তাই আপনারা যদি জিপি ব্যবহারকারী না হন, তাহলে আইফোন ১৪ এর “ই-সিম অনলি” ফিচার বাংলাদেশের জন্য সুবিধাজনক নয়।
তাই আইফোন ১৪ সিরিজের মডেলগুলো দেশের বাজার থেকে কেনার আগে অবশ্যই কোন দেশের ভ্যারিয়ান্ট তা দেখে কিনতে হবে। আবার বাইরে থেকে কেউ পাঠাতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের আইফোন ১৪ এর মডেলগুলো নেয়ার আগে এই বিষয়টি মনে রাখুন। আপনারা যদি শুধুমাত্র ইসিম ভিত্তিক আইফোন ব্যবহার করতে না চান, তাহলে ইউএস ভ্যারিয়েন্ট নেয়া থেকে বিরত থাকুন।
আবার অনেকে আছেন যারা ইউএস ভ্যারিয়েন্ট ব্যবহার করতে আগ্রহী। সেক্ষেত্রে আইফোন ১৪ সিরিজ কিনলে আপনারা সেগুলোতে সাধারণ সিম চালাতে পারবেন না। এটা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিন।