হার্ট সুস্থ রাখুন নিজে সুস্থ ও সতেজ থাকুন
হার্ট সুস্থ রাখুন: হৃদপিণ্ড আমাদের শরীরের অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। তাই হৃদপিন্ডের যত্ন না নিলে বড় ধরনের সর্বনাশ বা বিপদের আশঙ্কা থাকে। তাই সুস্থ থাকার জন্য অবশ্যই হার্টের যত্ন নিতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে।
![]() |
হার্ট সুস্থ রাখুন নিজে সুস্থ ও সতেজ থাকুন |
সুস্থ থাকার জন্য অবশ্যই হার্ট ভালো রাখতে হবে। তবে হৃদপিণ্ড ভালো রাখাটা এমন কোন কঠিন কাজ নয় একটু সচেতন থাকলেই সুস্থ থাকা সম্ভব।
হৃদপিণ্ড ভালো রাখার জন্য আঁশযুক্ত খাবার খান
হৃদপিণ্ড ভালো রাখার জন্য অবশ্যই যেসব খাবারে ফাইবার অথবা আশ রয়েছে ধরনের খাবার খাওয়া উচিত। এই ধরনের খাদ্য আমাদের দেহের প্রয়োজনীয় ব্যাকটেরিয়া সৃষ্টি করতে সাহায্য করে।
ফলে এই ধরনের ব্যাকটেরিয়া আমাদের দেহের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। সিম এবং মটর শুটি সহ ডাল জাতীয় শস্যে আঁশ রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ফল খেতে পারেন।
এই ধরনের আঁশ জাতীয় খাদ্য হার্টের জন্য অত্যন্ত উপকারী। বিশেষজ্ঞদের মতে আলুসহ শেকড় জাতীয় সবজি খোসাসহ রান্না করে খাওয়া খুবই উপকারী। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর আঁশ।
ফ্যাট এবং চর্বি জাতীয় খাবার ত্যাগ করুন
ফ্যাট এবং অতিরিক্ত চর্বি রয়েছে এই ধরনের খাবার অবশ্যই এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ এগুলো হার্টের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। বিশেষ করে লাল মাংস, মাখন, কেক, নারিকেলের তেল সহ এই ধরনের ফ্যাট জাতীয় খাদ্য খাওয়া পরিহার করতে হবে।
চর্বি জাতীয় খাদ্য গুলো হৃদপিন্ডের জন্য যেরকম ক্ষতিকর তেমনি স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। কারণ এই খাবার গুলো নিয়মিত খেলে হৃদপিন্ডের ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি শরীরের স্থূল এবং মোটা হয়ে যায়।
লবণ খাওয়া একেবারেই ছেড়ে দিন
লবণ অতিরিক্ত পরিমাণে শরীরের রক্তচাপ বৃদ্ধি করে। রক্তচাপ বাড়ার পাশাপাশি লবণ খেলে স্টোক এবং হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়।
যদিও অনেকের শুরুর দিকের লবণ খাওয়া ছেড়ে দিতে সমস্যা হয়। তবে ধীরে ধীরে এটি ঠিক হয়ে যায় এবং অভ্যাসে পরিণত হয়। লবণ ছেড়ে দেওয়ার পাশাপাশি চিনি খাওয়া একেবারে কমিয়ে দিন।
কারণ লবণ এবং চিনি দুটোই হার্টের জন্য খুবই ক্ষতিকর। তাই লবণ খাওয়া ছেড়ে দিলে হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যাবে।
ভিটামিন ও মিনারেল যুক্ত খাবার খান
ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। তাছাড়াও আমাদের হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমিয়ে দেয়। পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ক্যালসিয়াম জাতীয় পদার্থ উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধক।
এজন্য প্রতিদিন ফল এবং সবজি খাওয়া উচিত। প্রয়োজনে ফলের জুস পান করা। ছোট মাছ খাওয়া কলা এবং পেয়ারা জাতীয় বিভিন্ন মৌসুম ফল খাওয়া।
মিনারেল জাতীয় খাদ্য খাওয়া উচিত কারণ এটা হার্টের জন্য অনেক উপকারী। পাশাপাশি বিভিন্ন দুগ্ধজাতীয় খাবার সবুজ শাকসবজি যাতে ক্যালসিয়াম রয়েছে। এগুলো খাবার চেষ্টা করবেন এসব খাবার আপনার হার্টের জন্য অত্যন্ত ভালো।
অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণে আনুন
অতিরিক্ত ওজন হৃদপিন্ডের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তাই আপনার শরীর মোটা এবং চর্বি যুক্ত হলে অবশ্যই আপনার ওজন কমানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে আপনি লবণ, চিনি এবং চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া ছেড়ে দিতে পারেন।
এগুলো ছেড়ে দেওয়ার ফলে দ্রুত আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে। তবে সব সময় অবশ্যই লক্ষ্য রাখবেন যেন আপনার শরীরের ওজন অতিরিক্ত বৃদ্ধি না পায়।
অতিরিক্ত ওজন হলে ক্যালোরি জাতীয় খাবার খাওয়া কমিয়ে দিন এবং নিয়মিত ব্যায়াম করুন। ব্যায়াম আপনার ওজন কমানোর পাশাপাশি আপনার হৃদপিণ্ড ভালো রাখতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এছাড়াও আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে পারেন যা আপনার ওজন কমাতে সহায়তা করবে এবং হার্ট ভালো রাখবে। এছাড়াও যদি ধূমপান বা অন্য কোন নেশায় আসক্ত থাকলে অবশ্যই তা ত্যাগ করতে হবে।
কারণ এটা স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ক্ষতিকর পাশাপাশি হৃদপিন্ডের জন্য মারাত্মক ক্ষতি বয়ে আনে। তাই এই অভ্যাস গুলো আমাদের আজ এবং এখন থেকে ত্যাগ করতে হবে।
মানসিক চাপ কমিয়ে আনতে হবে
অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা এবং মানসিক চাপ হৃদপিন্ডের জন্য অনেক ক্ষতিকর। তাই সর্বদা চেষ্টা করতে হবে মানসিক চাপমুক্ত এবং দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকার।
এতে আপনি মানসিক ভাবে যেরকম নিজেকে সুখী অনুভব করতে পারবেন তেমনি আপনার হার্ট অনেক ভালো থাকবে।এছাড়া প্রতিদিন অন্তত সাত থেকে আট ঘণ্টা অবশ্যই ঘুমাবেন।
হৃদপিণ্ড ভালো রাখার জন্য অবশ্যই পর্যাপ্ত ঘুমের দরকার আছে। এবং চেষ্টা করবেন সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে কমপক্ষে আধা ঘণ্টা ব্যায়াম করার।
হার্ট সুস্থ রাখুন, ব্যায়াম আপনার শরীরের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে এবং নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করবে। এর ফলে আপনার স্বাস্থ্য যেমন ভালো থাকবে তেমনি হৃদপিণ্ড সম্পূর্ণ সুস্থ থাকবেন।
তাই শরীর এবং হার্ট ভালো রাখার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করার ক্ষেত্রে একদম অলসতা করবেন না। তবে শুরুর দিকে ব্যায়াম করতে কিছুটা কষ্ট অনুভব হতে পারে।
কিন্তু কিছুদিন করার পর এটি আপনার কাছে অনেক সহজ মনে হবে এবং ভালো লাগবে। এজন্য ব্যায়াম করা অবশ্যই শুরু করুন। শুরু করাটাই একটু কষ্ট তবে ব্যায়াম করার ভিতরে কোন কষ্ট নেই।
যেটা রয়েছে সেটা হলো আমাদের মানসিক দুর্বলতা। আর সুস্থ থাকার জন্য অবশ্যই আমাদের মানসিক দুর্বলতা উপেক্ষা করে নিয়মিত ব্যায়াম কিছু অনুশীলন করতে হবে।
এক্ষেত্রে কিছুদিন নিয়মিত ব্যায়াম করার পরে আপনি নিজেই ব্যায়াম করার ভালো অনুভূতিটা অনুভব করতে পারবেন। যেটা আপনি আগে অলস অবস্থায় কখনোই অনুভব করতে পারেননি। তাই হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখার জন্য এবং সুস্থ জীবন যাপনের জন্য আমরা অবশ্যই উপরের নিয়মগুলো মেনে চলবো।