ভিটামিন এ এর উৎস

ভিটামিন এ এর উৎস, কাজ, অভাবজনিত রোগ ও উপকারিতা

ভিটামিন এ এর উৎস: সুস্থ্য থাকার জন্য আমাদের শরীরে ভিটামিনের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। বিভিন্ন প্রকারের ভিটামিনের মধ্যে ভিটামিন ‘এ’ একটি অন্যতম ভিটামিন। ভিটামিন এ হচ্ছে ফ্যাট-দ্রবণীয় ভিটামিন যা প্রাকৃতিকভাবে অনেক খাবারের মধ্যে উপস্থিত থাকে। ভিটামিন এ সাধারণত দর্শন(চোখে দেখা), রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং প্রজননের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন এ হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস, কিডনি এবং অন্যান্য অঙ্গগুলি সঠিকভাবে কাজ করতে সহায়তা প্রদান করে।

সবজি মানুষের শরীর প্রচুর ভিটামিন এর ঘাটতি পূরণ করে থাকে। বিশেষ করে শীতকালে আমাদের দেহের যে পুষ্টিগুণ কমে যায় তা এই শীতকালীন সবজির মাধ্যমে আমরা তো পূরণ করতে পারি। মানুষের শরীরের যে পুষ্টি গুনাগুন অক্ষুন্ন থাকে তা এই শীতকালীন যে সবজি আমরা খেয়ে থাকি তার জন্যই। কারণ শীতকালে আমাদের দেশে অনেক ধরনের সবজি ফলে থাকে। এই শীতকালীন সবজি দিয়ে দেশের অধিকাংশ মানুষের শরীর পুষ্টি চাহিদা পূরণ হয়ে থাকে। তাই বন্ধুরা আজকে আমরা জানবো কোন কোন ফলে, মাছে ও শাকসবজিতে ভিটামিন ‘এ’ পাওয়া যায়, এবং এর কাজ কি ও এটির অভাবে কী কী রোগ হতে পারে।

আরও পড়ুন: শীতকালীন সবজির ৫টি উপকারিতা জেনে নিন

কোন খাদ্যে ভিটামিন ’এ’ পাওয়া যায়

গাজরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ পাওয়া যায় বিজ্ঞান তথ্য অনুসারে দৈনিক প্রয়োজনের প্রায় ৩৩৪ শতাংশ মেটাতে পারে এক কাপ গাজর।

মলা মাছ
দেখতে ছোট হলেও এই মলা মাছে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন এ মাছের তেল, ক্যারোটিন সমৃদ্ধ শাকসবজি, বিভিন্ন প্রকার রঙিন ফলমূল ও প্রাণিজ স্নেহে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ’এ’ পাওয়া যায়। এছাড়াও এর উৎসগুলো হলোঃ ১. শাকসবজিঃ লালশাক, পুঁইশাক, পালংশাক, লাউ, টমেটো, ব্রোকলি গাজর, ফুলকপি, বীট, মিষ্টি আলু ও মিষ্টি কুমড়া ইত্যাদি। ২. মাছঃ মলা ও ঢেলা মাছে ও কড মাছের যকৃতের তৈল। ৩. ফলমূলঃ পাকা পেঁপে, আম, কাঁঠাল, বেল, আপেল, কলা, তরমুজ ইত্যাদি ফল।
ভিটামিন এ এর উৎস, কলিজাতে প্রচুর ভিটামিন এ পাওয়া যায় এছাড়া প্রাণিজ থেকে বিশেষ করে দুধ, মাখন, পনির, ডিমের কুসুম, কলিজা বা যকৃৎ এর মধ্যে ভিটামিন এ পাওয়া যায়।

ভিটামিন ’এ’ এর কাজ

ভিটামিন’এ’ এর প্রধান কাজ হচ্ছে দেহের পুষ্টি ও বৃদ্ধিতে ভিটামিন এ সাহায্য করে। আমরা যে খাবার খায় তা হজমে ও ক্ষুধা সৃষ্টিতে কাজ করে। এছাড়াও °আমাদের চোখের দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখতে সহায়তা করে। °রক্তে স্বাভাবিক অবস্থা বজায় রাখে। ° ত্বককে সুস্থ রাখে এবং সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করে।

ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবে কোন রোগ হয়

শরীরে ভিটামিন ‘এ’ এর অভাব হলে নানা ধরনের রোগ বাসা বাঁধে । সর্দি, কাশি ইনফ্লুয়েঞ্জা সহ নানা প্রকার রোগ হয়ে থাকে। তবে সবচেয়ে বিপদজনক রোগগুলো হলো রাতকানা রোগ ও জেরপথালমিয়া রোগ। দুইটি রোগই কিন্তু চোখের রোগ। বন্ধুরা ‌আসুন তাহলে জেনে নিই রাতকানা রোগ কি এবং জেরপথালমিয়া রোগ কি?

১. রাতকানা রোগঃ রাতের বেলায় অল্প আলোয় কম দেখা বা দেখতে না পারাকে রাতকানা রোগ বলে। এই রোগে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় শিশুরা। তাই তাদেরকে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ সবুজ শাকসবজি ও রঙিন ফলমূল খাওয়াতে হবে। টিকা দিবসে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো উচিত। কেননা এটি রাতকানা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।

২. জেরপথালমিয়াঃ ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবে চোখের পানি শুকিয়ে যায় এবং চোখের আদ্রতা হারায়।ফলে চোখের কার্নিয়ার উপর শুষ্ক আবরণ পড়ে যায় তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এ সমস্যার কারণে চোখ আলো সহ্য করতে পারে না। চোখে পুঁজ জমা ও চোখের পাতা ফুলার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
রাতকানা ও জেরপথালমিয়া রোগের সময়মত চিকিৎসা না হলে চোখ অন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এ ধরনের রোগের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত অভিজ্ঞ ডাক্তারের চিকিৎসা নিতে হবে। নিয়মিত ভিটামিন এ গ্রহণ করলে এসব রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাই বেশি করে খেয়াল রাখতে হবে গর্ভবতী নারী, শিশু, বৃদ্ধ এদের প্রতি যেন তাদের দেহে এর অভাব পড়ে।

ভিটামিন এ উপকারিতা

ভিটামিন এ মানব স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক চর্বিযুক্ত দ্রবণীয় পদার্থ। ভিটামিন এ আমাদের দেহের অনেক ক্রিয়া-কলাপ এর জন্য অপরিহার্যে। যেমন স্বাস্থ্যকর দৃষ্টি বজায় রাখা,রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের স্বাভাবিক কার্যকারিতা নিশ্চিত করা। ভিটামিন-এ গর্ভের শিশুর সঠিক বৃদ্ধি এবং বিকাশে সহায়তা করেে। নিচে ভিটামিন এ এর গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *