ফাইভার কি? ফাইভারে অনলাইনে আয় করার উপায়

ফাইভার কি? ফাইভারে কাজ পাওয়ার উপায় ও ফাইভার গিগ

সম্মানিত ভিজিটরস বন্ধুরা আজকে আমরা আপনাদের জানাবো ফাইভার কি এবং এর মাধ্যমে আপনারা সহজেই কিভাবে আয় করতে পারবেন। বন্ধুরা ফ্রিল্যান্সিং শব্দটি হলো বর্তমান প্রজন্মের একটা বড় অংশের দৈনন্দিন জীবনে বহুল ব্যবহৃত একটি শব্দ। প্রতিনিয়ত বাড়ে চলছে ‌ফ্রিল্যান্সিং এর জনপ্রিয়তা। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ফ্রিল্যান্সিং জগতে প্রতিযোগিতার এক বিশাল ব্যাপকতা। বর্তমানে ইন্টারনেটে অসংখ্য ডিজিটাল মার্কেটপ্লেস রয়েছে, যার মধ্যে Fiver একটি বহুল জনপ্রিয় নাম। ফাইভারের কাজ করে এখন অনেকেই সফলতা অর্জন করেছে। Fiver কীভাবে কাজ করে এবং Fiver এ ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ইনকাম করার উপায় সম্পর্কে এই পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

ফাইভার কী? – What is Fiverr?
এখন প্রশ্ন হলো হচ্ছে আসলে ফাইভার টা কি? বন্ধুরা ফাইভার হল বিভিন্ন ডিজিটাল সেবার অন্যতম বৃহত্তম ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস। ফাইভার প্ল্যাটফর্মে প্রত্যেকটা ডিজিটাল সেবার জন্য অগণিত ফ্রিল্যান্সার বন্ধুরা রয়েছেন, যার মধ্য থেকে গ্রাহকগণ তাদের পছন্দেরজনকে খুঁজে নেন। ফাইভার এর যেকোনো সেবার অফারকে বলা হয় গিগ। মাত্র ৫ ডলারেও বিভিন্ন সেবা পাওয়া যায় ফাইভার মার্কেটপ্লেস। এজন্যই এর নামের সাথে ফাইভ কথাটি যুক্ত আছে। যদিও এর চেয়ে অনেক বেশি দামে সেবা পাওয়া যায় ফাইভারে।
ফাইভারে কাজ পাওয়ার উপায়?
  • কন্টেন্ট রাইটিং
  • গ্রাফিক ডিজাইনিং
  • ভিডিও এডিটিং
  • প্রুফরিডিং
  • ভয়েস-ওভার
  • সফটওয়্যার বা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট
  • ওয়েবসাইট ডিজাইনিং
  • ওয়েবসাইট ম্যানেজমেন্ট, ইত্যাদি।

ফাইভার গিগ

প্রথমে আপনাদের ফাইভার একাউন্ট অপশনে ক্লিক করে ফাইভার একাউন্ট তৈরি করে নিজের প্রোফাইল নির্মাণ করতে হবে। এরপর গিগ তৈরি করে নিতে হবে।
যেহেতু আমরা জানি ফাইভার গিগ সিস্টেমের উপর কাজ করে থাকে, তাই ফ্রিল্যান্সারদের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী গিগ তৈরী করা গুরুত্বপূর্ণ। উৎকৃষ্টমানের ফাইভার গিগ তৈরি করার সময় একজন ফ্রিল্যান্সারের যে বিষয়গুলি মাথায় রাখা দরকার নিচে তা উল্লেখ করা হলো-
  • অবশ্যই আপনাদের সেবার সাথে মানানসই সঠিক ক্যাটাগরি ও সাব-ক্যাটাগরি এবং ট্যাগ নির্বাচন করতে হবে। বায়াররা তাদের কাজের প্রয়োজন অনুযায়ী ফ্রিল্যান্সার খুঁজতে ক্যাটাগরি মেন্যু এবং ট্যাগ অধিক ব্যবহার করেন। তাই আপনাদের সেবার সাথে মিলিয়ে সঠিক ক্যাটাগরি ও সাব-ক্যাটাগরি নির্বাচন করা একান্তই জরুরি।
  • আপনাদের অফার করা সেবার সাবক্যাটেগরিতে কেমন প্রতিযোগিতা বিদ্যমান, তা বিশ্লেষণ করতে। ইতোমধ্যেই যে গিগগুলো ভালো অবস্থানে রয়েছে সেগুলো দেখে নিন এবং জানার চেষ্টা কর যে সাবক্যাটেগরিতে আপনারা গিগ পোস্ট করবেন, তাতে কী কী তথ্য যোগ করা প্রয়োজন।
  • যেহেতু ফাইভার একটি প্রতিযোগিতামূলক মার্কেটপ্লেস, তাই আপনাদের গিগ এর টাইটেলটি হওয়া চাই তাই ৬০ ক্যারেক্টার বা সর্বোচ্চ ৮০ ক্যারেক্টার এর মধ্যে সবচেয়ে সেরা টাইটেল। বন্ধুরা আপনাদের কাজে নিজস্বতা কী আছে তা অবশ্যই তুলে ধরতে হবে। টাইটেলে ইমোশন যোগ করতে বিশেষণ ব্যবহার করবেন। এছাড়াও আপনারা কত দ্রুত কাজ সম্পন্ন করেন, সেটাও যোগ করতে পারেন।

কীভাবে সফল Fiver গিগ তৈরী করবেন

  • ফাইভার এ একই গিগ এর জন্য একাধিক প্যাকেজ তৈরী করা যায়। এর যথাযথ ব্যবহার আপনাদেরকে অপেক্ষাকৃত অধিক কাস্টমার পেতে সাহায্য করবে।
  • গ্রাহকগণ আপনাদের গিগ দেখেই আপনাদেরকে কাজটি দিবে কিনা তার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। বন্ধুরা গিগ এর মধ্যে আপনাদের সাথে কাজ করার সুবিধা, আপনাদের কেন কাজটির জন্য যথাযোগ্য লোক, তা তুলে ধরবেন। এছাড়াও আপনাদের সোশ্যাল মিডিয়া লিংকগুলো গিগ এ যুক্ত করতে পারেন, যাতে প্রয়োজনে গ্রাহক আপনাদের সাথে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করতে পারে। যদিও ফাইভার প্ল্যাটফর্মের বাইরে গিগের অর্থ আদানপ্রদান করলে সেটা যদি ফাইভার জানতে পারে তাহলে আপনাদের একাউন্ট ব্লক করে দিতে পারে।
  • আপনাদের গিগ এ গিগ এর সেবা সম্পর্কিত ছবি, ভিডিও – এসব যুক্ত করতে হবে। এর ফলে আপনাদের কাজের সম্পর্কে গ্রাহকগণ বিস্তারিত ধারণা পাবেন।
  • আপনাদের গিগ এর লিংক সোস্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করবেন। ফাইভার এর মোবাইল অ্যাপস টিও ব্যবহার করতে পারেন। অ্যাপ এর মাধ্যমে গিগ হোয়াটসঅ্যাপ এর মত মেসেজিং অ্যাপে সহজেই শেয়ার করা সম্ভব। এছাড়াও কোরাতে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে আপনাদের সেবা সম্পর্কে ছোট করে কয়েকলাইন লিখে মানুষকে জানিয়ে দিতে পারেন।

ফাইভার সেলার লেভেল

গ্রাহক বন্ধুদের সন্তুষ্টি, সময়মত ডেলিভারি এবং হাই-কোয়ালিটি সেবার উপর নির্ভর করে। ফাইভারে ফ্রিল্যান্সারদের সেলার লেভেল প্রদান করা হয়। প্রতিটা সেলার লেভেল ফাইভারে আলাদা স্ট্যাটাস ও পরিষেবা অর্জনে সহায়ক। প্রতি মাসে ফাইভারে আপনাদের কাজের বিবরণ অনু্যায়ী সেলার লেভেল আপগ্রেড হতে পারে। ফাইভারে কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে সেলার লেভেল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

বন্ধুরা ফাইভার সেলার লেভেল বাড়ানোর উপায় এবং সুবিধা সম্পর্কে আরো জানতে ঘুরে আসতে পারেন ফাইভার এর লেভেল সংক্রান্ত অফিসিয়াল পেজ থেকে।

ফাইভার প্রোফাইলের মাধ্যমে কাজ পাওয়া যায় কি?

হ্যাঁ বন্ধুরা! একটি সাজানো গোছানো ফাইভার প্রোফাইলের মাধ্যমে কাজ পাওয়া যায়। আপনারা যদি একজন সেলার হয়ে থাকেন, তবে আপনাদের সেলার লেভেল, কাজের অভিজ্ঞতা, রেটিংস – এসব দেখে ক্রেতাগণ তাদের কাজের জন্য আপনাদের উপর ভরসা করবে। সুতরাং, নিজের ফাইভার প্রোফাইল এবং গিগকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করাও ফাইভারে সফল হওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।

ক্লায়েন্টকে কীভাবে খুশি রাখবেন?

সেলার এবং ক্লায়েন্ট – এই দুটিই হল ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোর মূল ভিত্তি বা চালিকাশক্তি। এজন্য ক্লায়েন্ট এর ইচ্ছা ও তাদের মতামতকে গুরুত্বের চোখে দেখা একজন সেলার এর প্রফেশনাল দায়িত্ব। ক্লায়েন্টকে খুশি রাখতে একজন সেলার এর যেসব ব্যাপার লক্ষ রাখা জরুরি তা হলো–

  • ক্লায়েন্ট এর সাথে ভদ্র এবং পেশাদার ব্যবহার করা।
  • দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের সব মেসেজের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করা।
  • মাঝেমধ্যে ক্লায়েন্ট কোনো ব্যাপারে ভুল বুঝে বা ব্যাপারটি ঠিকঠাক বুঝতে পারেনা। সেসব ক্ষেত্রে সংকোচ না করে যথাশীঘ্রই ব্যাপারগুলি তাদেরকে বুঝিয়ে দেয়া।
  • অধিকাংশ ক্লায়েন্টই ফাইভার এর টার্মস অফ সার্ভিসগুলোকে গুরুত্বের চোখে দেখেন। সুতরাং, সেগুলো মেনে চলা একজন সেলার এর একান্ত দায়িত্ব।

ফাইভার এবং ভবিষ্যৎ

কোনো ফ্রিল্যান্সার যখন কোনো অনলাইন মার্কেটপ্লেসে কাজ করা শুরু করে, প্রথমদিকেদেখা রায় কাজ পাওয়াটা অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে উঠে। তবে এই প্রক্রিয়া একবার শুরু হলে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়না। আপনারা যদি ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য ফাইভারকে বেছে নিয়ে থাকেন, তবে হাতে সময় নিয়ে উপরোক্ত বিষয়গুলো ভালো করে অনুসরণ করার চেষ্টা করুন।

ফ্রিল্যান্সিং জগতে সফলতা পাওয়া অনেক টা‌ সময়ের ব্যাপার। সুতরাং, ধৈর্য্যহারা না হয়ে আপনাদের লক্ষ্যে অটল থাকুন। সময়ের সাথে সাথে অবশ্যই সফলতা আসবেই।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *